Sunday, March 28, 2021

আমার প্রথম ও শেষ উপন্যাস সমালোচনা

পুরনো ফোল্ডারে একটা কাজের ফাইল খুঁজতে গিয়ে চোখে পড়ল অনেকদিন আগে আমার লেখা প্রথম ও শেষ উপন্যাস সমালোচনার কথা, আনন্দবাজার পত্রিকায় বেরিয়েছিল ২০০৩ সালের অক্টোবরের গোড়ার দিকে। পিডিএফ ফাইল-ও নেই, আর তখনও বাংলা ফন্টে লেখা চালু ছিলোনা, তাই মূল লেখাটি বাংলা হলেও ইংরেজী অক্ষরে লেখা ছিল। আনন্দবাজারের পুরনো সংস্করণের পাতায় ফন্টের সমস্যা - তাই লিংক বার করেও ফন্টের জন্যে পড়া গেলোনা -

http://archives.anandabazar.com/archive/1031007/4pustak1.htm

মজা লাগলো এতদিন বাদে পড়ে (যদিও বলে রাখা ভালো খুব দিলদরিয়া নয় সমালোচনাটি) তাই শেয়ার করলাম....


নামে কী আসে যায়? 


ঝুম্পা লাহিড়ী, ‘নেমসেক’, হার্পার-কলিন্স।  


আনন্দবাজার পত্রিকা, গ্রন্থ আলোচনা, অক্টোবর ৭, ২০০৩।  


অ্যামেরিকার গড়পরতা জনপ্রিয় “পারিবারিক” উপন্যাসগুলোর শুরুর দৃশ্যটা অনেক সময় এই রকম হয় - ছুটির দিন, বস্টন এর কোনো শহরতলীর বাড়ির জানলার কাঁচে রক্তিমাভ মেপল গাছের পাতার পরশ, বাতাসে হেমন্তের আমেজ, গৃহিনী রান্নায় ব্যস্ত, সন্ধ্যেবেলা অতিথি আপ্যায়ন হবে, এমন সময় বিনা মেঘে বজ্রপাত…অর্থাৎ, এইবার নাটকীয় কোনো ঘটনা ঘটবে, নয়তো তার খবর আসবে টেলিফোনে। 


রান্নার পদ রোস্টেড চিকেন পাল্টে করে দিন চিঙড়ির মালাইকারি, চরিত্রদের নাম বারবারা-জন পাল্টে করে দিন নন্দিনী-অমিতাভ, আর ঘটনার জায়গায় মধ্যবয়স্ক জনের পরকিয়া প্রেমের গোপনবৃত্তান্ত সহসা উদ্ঘাটন, বা আরো আধুনিক হতে চাইলে অপারেশন করে জেনি নাম্নী নারী হবার অঙ্গীকার ঘোষণা পাল্টে করে দিন নন্দিনী-অমিতাভের কন্যা শর্মিলার সহসা বিদ্রোহঘোষণা যে সে মা-বাবার পছন্দসই প্রবাসী বাঙালি পাত্রের সাথে বিয়ের সম্ভাবনায় রাজি নয় মোটেই, হৃদয় সঁপেছে সে কানে দুল পরা লম্বা চুল ঢুলুঢুলু চোখের এক বাউন্ডুলে অ্যামেরিকান ছেলের কাছে। 


নাম-পরিচয় পাল্টে দিলেও বইটি কি ও দেশে একইরকম জনপ্রিয় হতো? প্রবাসী বাঙালিদের বাদ দিলে সাধারণ   অ্যামেরিকান পাঠকরা কি সাগ্রহে পড়তেন এই কাহিনী ? এই অদ্ভুত চিন্তাটি মাথায় এলো ঝুম্পা লাহিড়ী-র অ্যামেরিকার পটভূমিকায় একটি প্রবাসী পরিবারকে কেন্দ্র করে লেখা বহু প্রতীক্ষিত নতুন উপন্যাস ‘দ্য নেমসেক’ পড়তে পড়তে।  


ঝুম্পা বয়েসে নবীন, কিন্তু এর মধ্যেই ইংরেজি ভাষায় যে ভারতীয় বা ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখকেরা দেশে-বিদেশে নাম করেছেন তাঁদের সাথে এক নিঃশাসে উচ্চারিত হয় তাঁর নাম। ঝুম্পার প্রথম বই ছোট গল্পের সংকলন ‘ইন্টারপ্রেটার অফ ম্যালাডিস’ প্রকাশ হবার পরে মার্কিন দেশে বেশ সাড়া ফেলেছিল, পুলিটজার প্রাইজ পেয়েছিল। তাঁর এই দ্বিতীয় বইটি হলো  আদি-নিবাস কলকাতা, অধুনা বস্টন-বাসী গাঙ্গুলী পরিবারের তিন দশক আর দুই প্রজন্মের আখ্যান।  


পূর্ববর্ণিত কাল্পনিক উপন্যাসটি যে গোত্রের সাহিত্যের নমুনা, তার সাথে সাহিত্যিক গুণমানের দিক থেকে ঝুম্পার লেখার কোনো তুলনা হয়না। তাঁর ভাষা নির্মেদ, স্থান-কাল-ঘটনার বর্ণনা সুদক্ষ শিল্পীর মতো যত্নশীল এবং মানবিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের বিবরণ মর্মস্পর্শী। কিন্তু পূর্বে উত্থাপিত প্রশ্নটি-র মতো একই ধরনের একটি প্রশ্ন মাথায় ঘুরতে থাকে আলোচ্য  উপন্যাসটি পড়েও – ঘটনাবলী এক রেখে বা কিঞ্চিৎ অদলবদল করে চরিত্রগুলো যদি অ্যামেরিকায় প্রবাসী বাঙালি না হয়ে অ্যামেরিকায় প্রবাসী ইতালীয় বা আইরিশ হতো, তাহলে কেমন লাগতো বইটি? নামে কি সত্যি কিছু আসে যায়? উপন্যাসটির মধ্য দিয়ে দিয়ে বাঙালি জীবনের যে ছবি ফুটে ওঠে, তার প্রতি প্রাচ্য সম্পর্কে স্বল্পপরিচয়প্রসূত রোমান্স-জড়ানো কৌতুহলই কি টানে সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদে নব্যদীক্ষিত পাশ্চাত্যের পাঠককে? না কি যে কোনো দেশের যে কোনো  কালের পাঠককেই আকৃষ্ট করবে অভিবাসীদের ফেলে আসা জীবনের প্রতি পিছুটান, আর নতুন অপরিচিত পৃথিবীতে সাফল্যের ও স্বচ্ছলতার অমোঘ আকর্ষণের টানাপোড়েনের চিরন্তন মানবিক এই কাহিনী?


গল্পের শুরু হচ্ছে কেন্দ্রীয় চরিত্র গোগোলের বস্টন শহরে জন্ম দিয়ে। তার বাবা অশোক এমআইটি-তে ইঞ্জিনিয়ারিংএ পিএইচডি করছেন, মা অসীমা গৃহবধু। দুজনেই বড়ো হয়ে উঠেছেন কলকাতায়। সন্তানের ডাকনাম দেওয়া হলো গোগোল। নিকোলাই গোগোল শুধু যে অশোকের অন্যতম প্রিয় লেখক তা শুধু নন, যৌবনে এক ভয়াবাহ ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান যাত্রাপথে রাত জেগে এই লেখকের ছোট গল্পের সংকলন পড়ছিলেন বলে। অসীমার দিদার দেশ থেকে ভালো নাম পছন্দ করে পাঠানোর কথা চিঠিতে, সে চিঠি আর আসেনা, পরে জানা যায় পক্ষাঘাতে তিনি বোধশক্তি হারিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত একটা ভালো নাম বাছা হয় বটে, নিখিল, যা একটি পরিচিত বাঙালি নাম আবার নিকোলাইয়ের সাথে মিলও আছে, কিন্তু ঘটনাচক্রে গোগোল নামেই সে পরিচিত হয় ঘরেবাইরে। 


বড় হয়ে উঠতে উঠতে তার নাম নিয়ে গোগোলের মনে চলে নিরন্তর টানাপোড়েন। গোগোল নামটি তার ভাল লাগেনা – একে অদ্ভুত নাম, তায় সেটা না অ্যামেরিকান না ভারতীয়, তাই সব জায়গায় পরিচয় দেওয়ার সময় শুরু হয়ে যায় নাম নিয়ে এক অবধারিত কথোপকথন। বিদেশে বড় হয় ওঠা, স্কুলের আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের থেকে আলাদা হবার অস্বস্তি ও নিঃসঙ্গতার যন্ত্রণা কেন্দ্রীভূত হয় তার নিজের নামটির প্রতি বিতৃষ্ণায়। সাবালক হয়ে সে আদালতে দরখাস্ত করে গোগোল নামটি বিসর্জন দেয়, বাইরের পৃথিবীতে পরিচিত হয় শুধুমাত্র নিখিল বলে। তার মা-বাবা এবং আত্মীয়-বন্ধুরা অবশ্য তাকে  গোগোল নামেই ডাকতে থাকে।  এই পিছুটান তাকে অস্বস্তিতে রাখে। যেমন অস্বস্তিতে রাখে তার মা-বাবার সমস্ত সামাজিক জীবন স্থানীয় বাঙালি সমাজকে নিয়ে আবর্তিত হওয়ায়, যার সাথে সে তার বাইরের পৃথিবীকে মেলাতে পারেনা। তাঁদের মন যেন পড়ে আছে ফেলে আসা আলোকবর্ষ দূর এক গ্রহে, যা কয়েক বছর অন্তর কলকাতার অগণিত আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করতে যাবার ঝটিকা সফর বাদ দিলে গোগোলের কাছে অপরিচয়ের আঁধারে ঢাকা।


ঝুম্পা এই পরিবেশ, এই জীবনের কথা তাঁর নিজের অ্যামেরিকায় প্রবাসী বাঙালি পরিবারে বড় হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা থেকে খুবই অন্তরঙ্গ ভাবে জানেন। সহজ গদ্যে প্রবাসী জীবনের নেহাতই সাধারণ দৈনন্দিন নানা ঘটনার মধ্যে তিনি সহসা পাঠককে কিছু চিরন্তন জীবনজিজ্ঞাসার মুখোমুখি করে দেন। বইটি পড়তে পড়তে মূল চরিত্রগুলি, অর্থাৎ গোগোল আর তার মা-বাবা, হয়ে ওঠে আমাদের কাছের মানুষ। অন্যান্য চরিত্রগুলি অবশ্য মনে অতটা রেখাপাত করেনা। যেমন গোগোলের জীবনে যে বান্ধবীরা আসে এবং বিদায় নেয় অকস্মাৎ, বাহ্যিক তফাৎ সত্ত্বেও চরিত্র হিসেবে যেন একইরকম মনে হয়, কিছুটা খামখেয়ালি ও আত্মকেন্দ্রিক। এ ছাড়া উপন্যাসটি প্রায় সম্পূর্ণভাবে হাস্য-কৌতুক-পরিহাস বর্জিত, যা চরিত্রগুলির জীবনের সংকীর্ণ গন্ডী আর আবহে বিষাদের সুরের সাথে মিলেমিশে মাঝেমাঝে বন্ধ ঘরে আবদ্ধ থাকার অনুভূতি জাগাতে পারে পাঠকের মন।    


তুলানামূলক বিচার করতে গেলে যে উপন্যাসটির নাম প্রথমে মনে হয় তা হলো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পূর্ব পশ্চিম’। এতে প্রবাসী বাঙালি জীবনের টানাপোড়েনের যে ছবি পেয়েছি তা মনে দাগ কেটেছিল অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, চার দেশ অর্ধশতক ব্যাপী এই কাহিনীতে অগণিত চরিত্রের জীবনস্রোতের আপাতবিচ্ছিন্ন ধারা ক্রমে মিলেমিশে প্রবল কলরোলে পাঠককে ভাসিয়ে নিয়ে যায় মোহনার দিকে, যেখানে নাম-পরিচয় অবান্তর মনে হয়। এই উপন্যাসটি বাংলা পাঠকদের কাছে আর পাঁচটা মনোরঞ্জক লেখার সাথে মিলেমিশে তার প্রাপ্য গুরুত্ব পায়নি বলে মনে হয়। আর ইংরেজি ভাষার দেশি বা বিদেশি পাঠকদের কতজনই বা জানেন এটির কথা। কিছু সমসাময়িক বাংলা লেখার অনুবাদ হলেও, দেশে-বিদেশে তাদের প্রচার খুবই সীমিত। তা না হলে আর সালমান রুশদি কি করে বলতে পারেন যে ভারতীয় সাহিত্যের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে ইংরেজি ভাষায়, আঞ্চলিক ভাষায় নয়।


আর বাংলা ছেড়ে আন্তর্জাতিক সাহিত্যের দিকে যেদি তাকাই, ইংরেজি ভাষায় লেখা অভিবাসী জীবন নিয়ে সম্প্রতি পড়া  কোন উপন্যাসটি সবচেয়ে ভাল লেগেছে যদি জিজ্ঞেস করেন, তার উত্তরে যে বর্ণোজ্জ্বল উপন্যাসটির কথা বলব, ইংল্যান্ডে বড় হয়ে ওঠা ইংরেজ বাবা এবং জামাইকান মায়ের কন্যা জেডি স্মিথের একটি প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবার আর একটি জামাইকান-ইংরেজ মিশ্র পরিবারের দুই প্রজন্মকে নিয়ে লেখা ‘হোয়াইট টিথ’।



[পুরনো ফোল্ডারে একটা কাজের ফাইল খুঁজতে গিয়ে চোখে পড়ল অনেকদিন আগে আমার লেখা প্রথম (ও হয়তো) শেষ উপন্যাস সমালোচনার কথা, আনন্দবাজার পত্রিকায় বেরিয়েছিল ২০০৩ সালের অক্টোবরের গোড়ার দিকে। পিডিএফ ফাইল-ও নেই, আর তখনও বাংলা ফন্টে লেখা চালু ছিলোনা, তাই লেখাটি বাংলা হলেও ইংরেজী অক্ষরে লেখা অবস্থায় ছিল আমার কাছে। আনন্দবাজারের পুরনো সংস্করণের পাতায় ফন্টের সমস্যা - তাই লিংক বার করেও ফন্টের জন্যে পড়া গেলোনা : https://archives.anandabazar.com/archive/1031007/4pustak1.htm। ]



Name ki ase jay
Review of The Namesake by Jhumpa Lahiri, Flamingo (An Imprint of Harper-Collings), 2003.
America-r garparta janapriya “sangsarik” upanyasgulir surur drishyati anek samay erakam hoy - chhutir din, boston er sahratali-r barir janlar kanche raktimabha maple gachher parash, batase hemant-er amej, grihenee rannay byasto, sandhebelay atithi-apyayan hobe, emon samay bina meghe bajrapat…Arthat eibar natokiyo kono ghatana ghatbe noyto tar khabar asbe telephone-e.
Rannar pod roasted chicken palte kore din chhingrir malaikari, charitra-der nam Barbara-John palte kore din Nandini-Amitabha ar ghatana-r jaygay madhyabayaska John-er parakiya prem-er gopan brittanto sahasa udghatan, ba, aro adhunik hote chaile, operation kore Jenny namnee naree hobar angikar ghoshana (ogo, tahole tomay ki bole dakbe amader chhele meyera…) palte kore din Nandini- Amithabha-er kanya Sarmila-r sahasa bidrohaghoshana je se ma-babar pacchandasoi prabasi bangali patrer sathe biyer sambhabanay alap korte raji noy motei, hriday sampechhe se kane dul pora lamba chul dhhulu dhhulu chokh parar baundule ek American chheler kachhe.
Nam parichay palte dileo boi-ti ki o deshe eki rakam janapriya hoto? Prabasi bangali-der bad dile sadharan American pathakra ki sagrohe porten ei kahini? Ei adbhut chinta-ti mathay elo Jhumpa Lahiri-r America-r patabhumikay ekti prabasi bangali paribar ke kendra kore lekha bahu pratikhhito natun upanyas parte parte.
Jhumpa boyese nabeen, kintu er madhyei ingreji bhashay je bharotio ba bharotio banghsadbhuto lekhakera deshe-bideshe nam korechhen tander sathe ek nihshashe uchharito hoy tanr nam. Jhumpa-r pratham boi chhoto galper sankalan Interpreter of Maladies prakash hobar pore markin deshe besh sara phelechhio, Pultizer Prize peyechhilo. Tanr dwito boi, adi-nibas Kolkata, adhuna boston-basee Ganguly paribar-er tin dashak ar dui prajanmer akhyan.
Purba-barnito kalpanik upanyasti je gotrer sahityer namuna, tar sathe sahityik guna-maner dik theke Jhumpar lekhar kono tulana hoyna. Kintu sei prasange purbe uththapito prashnati-r mato eki dharaner ekti prashna mathay ghurte thake tanr alochito upanyasti poreo. Ghatanabali ek rekhe ba kinchit adalbadal kore charitra guli jadi americay prabasi bangali na hoye americay prabasi Italian ba Irish hoto, tahole kemon lagto boiti? Name ki satyi kichhu ase jay? Upanyastir madhye diye Bangali jeeban-er je chhabi phute othhe, tar prati prachyo-samparke swalpaparichay-prasuto romance-jarano koutuhol-i ki tane multicultarlism-e nabya-deekhkhito pashchatyer pathok-ke? Na ki jekono desh-er jekono kaler pathok-kei akrishto korbe abhibasee-der phele asa jeeban-er prati pichhutan, ar natun aparichito prithibee-te saphalyer o swachchhalatar amogh akorshon-er tanaporen-er chirantan manabik ei kahini?
Galper suru hochche kendriya charitra Gogol-er Boston sahare janma diye. Tar baba Ashok M.I.T. te engineering-e Ph.D. korchhen, ma Ashima grihabadhu. Dujonei baro hoye uthechhen Kolkatay. Santan-er daknam dewa holo Gogol. Nikolai Gogol sudhu je Ashok-er anyatama priya lekhak ta non, joubane ek bhayabaha train accident-e tini prane benche jan jatrapathe rat jege ei lekhaker chhoto galper sankalan porchhilen bole. Ashima-r Dida desh theke bhalo nam pachhanda kore pathaben chithite, se chithi ar asena, jana jay pakhkhaghate tini bodhshakti hariechhen. Shesh parjanta ekta bhalo nam bachha hoy bote, Nikhil, ja ekti parichito bangali nam, abar Nikolai-er sathe mil-o achhe, kintu ghatanachakre Gogol namei se parichito hoy ghare-baire.
Baro hoye uthte uthte tar nam niye Gogol-er mone chale nirantar tanaporen. Gogol nam ti tar bhalo lagena – eke adbhut nam, tay seta na American na Bharatiyo, tai sab jaygay parichay debar samay suru hoye jaye nam niye ek abadharito kathopokathon. Bideshe baro hoye otha, school-er ar panchta chhele-meyer theke alada hobar aswasti o nihsangata-r jantrana kendribhuto hoy tar nijer nam-tir prati bitrishnay. Sabalak hoe se adalat-e darkhasto kore Gogol nam-ti bisarjan dey, bairer prithibite parichito hoy sudhumatro Nikhil bole. Tar ma-baba ebong atmiya-bandhura abasya take Gogol namei dakte thaken. Ei pichhutan take aswasti-te rakhe. Jemon aswasti-te rakhe tar ma-babar samasta samajik jeeban sthanio bangali-samaj ke niye abortito howay, jar sathe se tar bairer prithibi-ke melate parena. Tander mon jeno pore achhe phele asa alok barsha dur ek grahe, ja koyek bachhar antar Kolkatay aganito atmiyaswajaner sathe dekha korte jabar jhatika saphar bad dile Gogol-er kachhe aparichayer andhare dhhaka.
Prabasi bangali matrei Ashoke o Ashima-r charitra gulike chinte parben, mil khunje paben nijeder ba parichitoder sathe. Desh theke chhatra hisebe ese apartment, department, advisor ar Budweiser (shesherti o deshe janapriya beer-er brand), chakri pele bari-gari-green card, sara saptaha aklanta parishram, ar saptahante sthanio bangali adda-r aborte kete jay jiban. Chhele meye-der bhalo swastha, sahebder mato uchcharone ingreji balate garbo hoy, kintu bhalo kore bangla na bolte para, desher, atmiya-swajaner, nija-sanskritir sathe jogajog-er abhabjanito sikarheentoay jage ashonka.
Jai hok, Gogol school shesh kore, college-e bharti hoy, sthir kore se sthapati hobe. Ar panchti saphal prabasi bangali chhele meye-r mato tar jeeban-o khub-i gatanugatik, sabcheye ullekhjogya ghatana guli holo baro hoye othar sathe sathe ekadhik prem o bichchhed. Kintu baba-r akosmik mrityu take thhele dey je atmanusandhan-er pathe, sei dirgha pakdandi-r sheshe se khunje pay tar jeeban-byapi tanaporen theke uttaraner mantra - name ki ase jay. Kahinir shesh-e Gogol hate tule ney Nikolai Gogol-er chhoto-galpor sankalan, ja tar baba take kaishore upahar diyechhilen, kintu nijer namer prati birag-bashata se etodin pare dekheni.
Jhumpa ei paribesh, ei jeeban-er katha tanr nijer americay prabasi bangali paribar-e baro hoye othar abhignata theke khubi antaranga bhabe janen. Sahaj gadye prabasi jeeban-er nehati sadharon dainandin nana ghatanar madhye tini sahasa pathak-ke kichhu chirantan jeeban-jigyasar mukhomukhi korie den. Boiti parte parte mul charitra guli, arthat Gogol ar tar Ma-Baba, hoye othhe amader kachher manush. Anyanya charitra guli abashya mone atota rekhapat korena. Jemon Gogol-er jeebane je bandhabeera ase ebong biday ney akasmat, bahyik taphat satteo chairtra hisebe tader jeno eki rakam mone hoy, kichhuta khamkheyali o atmokendrik. E chhara upanyasti pray sampurnobhabe hasya-koutuk-parihas barjito, ja charitro-gulir jeeban-er sankeerno gandee ar abohe bishader-r surer sathe milemishe majhemajhe bandho ghare abodhdhho thakar anubhuti jagate pare pathoker mane.
Tulanamulak bichar korte gele je upanyastir nam prathame mone hoy ta holo Sunil Gangopadhyay-er Purba Pashchim. Ete prabasi bangali jeeban-er tanaporener je chhabi peyechhi ta mane dag ketechhilo anek beshi. Sudhu tai noy, char-desh ardha shatak byapi ei kahinite aganito charitrer jeebansroter apato-bichchhinno dhara krame milemishe gie prabol kalarole pathak-ke bhasie niye jay je mohanar dike, sekhane nam-parichay abantar mone hoy. Ei upanyasti bangla pathakder kachhe ar panchta manoranjak lekhar sathe mile mishe tar prapya gurutto payni bole mone hoy. Ar ingreji bhashar deshi ba bideshi pathak der katojoni ba janen etir katha. Kichhu samasamayik bangla lekhar anubad holeo, deshe-bideshe tader prachar to khubi seemito. Ta na hole ar Salman Rushdie ki kore bolte paren je bharatiyo sahity-er sabcheye ullekhjogya kaj hochchhe ingreji bhashay, anchalik bhashay noy.
Ar bangla chhere antarjatik sahityer dike jadi takai, ingreji bhashay lekha abhibasee-jeeban niye samprati para kon upanyas-ti sabcheye bhalo legechhe jadi jigges koren, tar uttore je barnojjal upanyastir katha bolbo, ta holo England-e baro hoe otha Ingrej baba ebong Jamaican ma-er kanya Zadie Smith-er ekti prabasi Bangladeshi paribar ar ekti Jamaican-ingrej mishra paribar-er dui prajanma ke niye lekha “White Teeth”.
ARCHIVES.ANANDABAZAR.COM
Anandabazar Patrika - Book
 

No comments:

Post a Comment